Monday, November 3

বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আপাতত কোনো জোটে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, বিএনপি-জামায়াতের বর্তমান অবস্থান থেকে সরে না এলে এনসিপি তাদের সঙ্গে কোনো জোটে যাবে না।

রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নেতৃত্বে এনসিপির একটি প্রতিনিধি দল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গিয়ে প্রতীক বরাদ্দের নতুন আবেদন জমা দেয়। এবারের আবেদনে দলটি শাপলা, সাদা শাপলা ও শাপলা কলিকে নির্বাচনী প্রতীক হিসেবে বরাদ্দ চেয়েছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “বিএনপির চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং জামায়াতে ইসলামীর ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের সঙ্গে এনসিপি যুক্ত হতে চায় না। এই দুই দল নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এলে জোটের চিন্তা করবে এনসিপি।”

তিনি আরও বলেন, “ধানের শীষ আর শাপলা কলিতেই হবে ফাইট। আমাদের দল থেকে তিনশ’ আসনেই প্রার্থী দেওয়া হবে।”

এ সময় নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে নাসীরুদ্দীন বলেন, “নির্বাচন কমিশন এখন ইঞ্জিনিয়ারিং কমিশনে পরিণত হয়েছে। তাদের স্বেচ্ছাচারী আচরণ দেশের মানুষ দেখেছে।”

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, “সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টারা যদি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গোপনে প্রেম করেন, তাহলে গণতন্ত্রের যাত্রা ব্যাহত হবে। এ বিষয়ে সরকারের সতর্ক থাকা উচিত।”

এর আগে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে এনসিপির প্রতিনিধি দল বৈঠক করে। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক খালিদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল হক মুসা।

এদিকে, রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক রাজনৈতিক ব্রিফিংয়ে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, “সংস্কারের বিপক্ষের কোনো দলের সঙ্গে জোটে যাওয়া সম্ভব নয়। নির্বাচন ও সংস্কারকে আলাদা কার্যক্রম হিসেবে দেখা যাবে না। আমাদের মৌলিক দাবি—সংস্কার, নতুন বাংলাদেশ গঠন, আওয়ামী ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি ও বৈদেশিক আধিপত্যের অবসান। এই দাবিগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য থাকলে আমরা ঐক্য বা সমঝোতার বিষয়ে বিবেচনা করব।”

তিনি আরও জানান, “আমরা ৩০০ আসনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি নিজে ঢাকায় প্রার্থী হচ্ছি। দলের প্রার্থীদের তালিকা এই মাসেই প্রকাশ করা হতে পারে।”

প্রসঙ্গত, গত জুনে নিবন্ধনের সময় এনসিপি শাপলার পাশাপাশি কলম ও মোবাইল ফোন প্রতীক চেয়েছিল। পরে দলটি কেবল শাপলা প্রতীকের দিকেই জোর দেয়। তবে রাজনৈতিক দলের প্রতীক তালিকায় শাপলা না থাকায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) বারবার তাদের আবেদন নাকচ করে দেয়।

জুলাইয়ে কমিশন ৪৬টি নতুন প্রতীক যুক্ত করে মোট ১১৫টি প্রতীক ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়, কিন্তু তাতেও শাপলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এরপর থেকে এনসিপি ও ইসির মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।

প্রতীক পছন্দের শেষ দিন ছিল ১৯ অক্টোবর। সে সময়ও এনসিপি জানায়—শাপলা ছাড়া অন্য কোনো প্রতীক তারা নেবে না। পরে ৩০ অক্টোবর ইসি প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে ‘শাপলা কলি’ অন্তর্ভুক্ত করে।

Leave A Reply


Math Captcha
33 + = 36