নিজস্ব প্রতিবেদক
জামায়াতে ইসলামী বলেছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অনুষ্ঠিত না হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “জুলাই সনদ ও গণভোটের ওপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সরকারকে যে আদেশ জারির সুপারিশ করেছে, তা আজ (বৃহস্পতিবার) রাত অথবা আগামীকালের মধ্যেই বাস্তবায়ন করতে হবে।”
পিআর দাবি আদায় হয়নি, গণভোটও যদি না হয় তাহলে জামায়াতের পরবর্তী কর্মসূচি কী— এমন প্রশ্নের জবাবে তাহের বলেন, “আমরা আদায় করতে পারিনি কে বলছে? আমরা আন্দোলনের মধ্যেই আছি। আজ রাতের মধ্যেই দেখি করবে কি না, কালও সময় আছে, বাকিটা কাল দেখা যাবে।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি গণভোটকে ‘গলা টিপে হত্যা’ করার চেষ্টায় লিপ্ত। তাহেরের ভাষায়, “বিএনপি নির্বাচনের দিন গণভোট চায়, যাতে গণভোট কার্যত অর্থহীন হয়ে পড়ে। তাদের আচরণ হচ্ছে— যেখানে লাভবান হবে, সেখানেই সংস্কার চায়।”
জামায়াত নেতা আরও বলেন, “আমরা বারবার বলেছি— ফেব্রুয়ারিতেই জাতীয় নির্বাচন চাই। যে সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, সেটির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন চাই। জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট চাই এবং গণভোটের রায়ের ভিত্তিতেই নির্বাচন চাই।”
তিনি দাবি করেন, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের আগেই কিছু রাজনৈতিক দল ও মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং পরিবেশ উত্তপ্ত করার চেষ্টা করছে। “নির্বাচন বানচাল নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে নানান প্রচারণা চলছে,” বলেন তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তাহের বলেন, “বিএনপি বলছে, কোনোভাবেই গণভোট মানবে না। তাই ইন্টেরিম সরকারের অনতিবিলম্বে গণভোটের তারিখ ঘোষণা করতে হবে। কোনো সময়ক্ষেপণ নয়, আজই ঘোষণা দিন। রাতের বেলায়ও অনেক আদেশ জারি করা যায়। নাহলে জনগণ সরকারের ওপর আস্থা হারাবে।”
তিনি সতর্ক করেন, “যদি সময়ক্ষেপণ করতে করতে বলা হয় গণভোটের সময় নেই, তাহলে এটা হবে প্রতারণা। প্রতিটি দিন, প্রতিটি ঘণ্টা এখন গুরুত্বপূর্ণ।”
তাহের আরও বলেন, “ঐকমত্য কমিশন চেষ্টা করেছে প্রতিটি বিষয়ে সব পক্ষকে একমত করতে। শেষ পর্যন্ত ৬০ শতাংশ বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। কমিশন সব দলের ঐক্যের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। তবে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হতে পারে না।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, এ টি এম মাছুম এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ।

