গাজার বিস্তীর্ণ বাস্তুচ্যুত ক্যাম্পগুলোতে লাখো মানুষের মাথার ওপর রয়েছে কেবল প্লাস্টিকের ছেঁড়া ত্রিপল আর টালমাটাল তাঁবু। এর মধ্যেই ধেয়ে আসছে ঝড় ‘বায়রন’। দুই বছরের যুদ্ধ, বোমাবর্ষণ, ক্ষুধা আর বিশৃঙ্খলার পর প্রকৃতির এই আঘাত নতুন আতঙ্ক তৈরি করেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, কয়েক দিন ধরে ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া আঘাত হানতে পারে। কিন্তু গাজায় নেই ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নেই আশ্রয়কেন্দ্র—ফলে অল্প বৃষ্টি হলেও শিবিরগুলো পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
গাজা সিটির ক্যাম্পে তাঁবুগুলো এতটাই দুর্বল যে সামান্য বাতাসেই কাঁপতে থাকে। বাস্তুচ্যুত হানি জিয়ারা বলেন, “হাওয়া শুরু হলে সবাই মিলে খুঁটি ধরে রাখি। গত রাতে পানি ঢুকে সব ভিজে গেছে।” একইভাবে বন্দর এলাকার মেরভিত জানান, “আমাদের কিছুই নেই। প্রস্তুতি নেব কী দিয়ে?”
পানি-খাবারের ঘাটতি এতটাই তীব্র যে ঝড়ের আগে মজুত রাখার সুযোগও নেই। অনেক পরিবার কয়েক দিন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পানি বা খাবার পায় না।
তবুও একে অন্যকে সাহায্য করাই গাজার মানুষের ভরসা। কেউ খুঁটি জোগাড় করেন, কেউ তাঁবু মেরামত করেন, নারীরা মিলেমিশে রান্না করেন। ঝড়ের আগে স্বেচ্ছাসেবীরা তাঁবুগুলো ঘুরে ঘুরে দুর্বল জায়গা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
বাসিন্দাদের মনেও চরম ক্লান্তি। উইসাম নাসের বলেন, “আমরা ভেঙে পড়েছি। প্রতিদিন নতুন ভয়—ক্ষুধা, ঠান্ডা, রোগ, এখন আবার ঝড়।”
ঝড় ‘বায়রন’ গাজার মানুষের কাছে শুধু আবহাওয়া নয়—এটি তাদের ভাঙা জীবনে আরও একটি কঠিন পরীক্ষা। তবুও মানুষ অপেক্ষা করছে। কারণ তাদের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই। তারা শুধু প্রার্থনা করছে—এইবার যেন বাতাস একটু দয়া করে।

