ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগরে নতুন ‘বাবরি মসজিদ’-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও স্থানীয় বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। প্রস্তাবিত এই মসজিদ নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যেই বিপুল পরিমাণ অনুদান জমা পড়েছে, যা স্থানীয়ভাবে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ৩৩ বছর পর আনুষ্ঠানিকভাবে এ মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুসলিম সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। অনেকে হাতে নিয়ে আসেন মসজিদ নির্মাণের ইট। অনুষ্ঠানে ৪০ হাজার মানুষের জন্য রান্না করা হয় বিরিয়ানি।
অনুদান সংগ্রহের জন্য সেখানে স্টেনলেস স্টিলের তৈরি ১১টি বড় দানবাক্স রাখা হয়। পাশাপাশি কিউআর কোড স্ক্যানের মাধ্যমেও অনলাইনে অনুদান গ্রহণ করা হয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন কেবল অনলাইনে ৯৩ লাখ রুপি জমা পড়েছে বলে দাবি করেন হুমায়ুন কবীর।
১১টি ট্রাঙ্ক ভর্তি অর্থ, গণনায় নিয়োগ ৩০ কর্মী
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, দানবাক্সগুলোতে মোট ১১টি ট্রাঙ্ক ভর্তি নগদ অর্থ এসেছে। এসব নগদ গণনার জন্য ৩০ জন কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। মসজিদ নির্মাণ কমিটির উদ্যোগে হুমায়ুন কবীরের বাড়িতেই চলছে এই বিশাল অঙ্কের টাকা গোনার কাজ।
রোববার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চারটি দানবাক্স এবং একটি বস্তার টাকা গণনা শেষে পাওয়া গেছে ৩৭ লাখ ৩৩ হাজার রুপি। বাকি সাতটি দানবাক্সের গণনা সোমবার বিকেল থেকে শুরু হওয়ার কথা। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে পুরো অর্থ গণনা লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছে।
স্বচ্ছতার দাবি হুমায়ুন কবীরের
মসজিদ নির্মাণে রাজনৈতিক অর্থ সাহায্যের অভিযোগ নাকচ করে দেন হুমায়ুন কবীর। তিনি বলেন,
“মানুষের দানেই তৈরি হবে আমার বাবরি মসজিদ। কোনও রাজনৈতিক দলের ফান্ডিং নয়। সবকিছু প্রমাণসহ লাইভ করেছি।”
তার বিরুদ্ধে তৃণমূল বা বিজেপির টাকায় মসজিদ নির্মাণের অভিযোগ ওঠায় তিনি তা ‘মিথ্যে ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে দাবি করেন এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখতে অনুদান গণনার প্রতিটি ধাপ ফেসবুক লাইভে দেখানোর সিদ্ধান্ত নেন।
বিপুল সমাগমে উৎসবমুখর পরিবেশ
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দিন রাজ্যের প্রায় সব জেলা থেকেই বিপুল সংখ্যক মুসল্লি, আলেম-ওলামা ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন। পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হুমায়ুন কবীর।
তথ্যসূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, আনন্দবাজার অনলাইন

