ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানকে ঘিরে উপচে পড়া মানুষের ঢল নেমেছে। দীর্ঘদিনের দাবি ও আন্দোলনের পর এ দিনটি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে দেখা হচ্ছে। শনিবার সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভিড় করেন।
অনুষ্ঠানে ব্যাপক উপস্থিতি
মুর্শিদাবাদ শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়, বড় রাস্তাসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে সকাল থেকেই মানুষের স্রোত দেখা যায়। স্থানীয় মসজিদ কমিটি, বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ জনগণের উদ্যোগে আয়োজনটি উৎসবমুখর পরিবেশে রূপ নেয়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ ও প্রশাসন পুরো এলাকায় কড়া নজরদারি চালায়।
ধর্মীয় নেতাদের বক্তব্য
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে স্থানীয় ও আঞ্চলিক বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা বলেন, “বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলার বেদনা আজও মুসলিমদের হৃদয়ে রয়ে গেছে, তবে শান্তিপূর্ণভাবে নতুন ভিত্তি স্থাপন আমাদের ঐক্য ও বিশ্বাসের প্রতীক।”
তারা আরও জানান, “এই ভিত্তিপ্রস্তর একটি নতুন সূচনা—সম্প্রীতি, শান্তি ও ন্যায়বিচারের পথে অগ্রযাত্রার প্রতীক।”
সাধারণ মানুষের অনুভূতি
অনুষ্ঠানে হাজির বহু মানুষ জানান, এটি তাদের কাছে ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কেউ কেউ বলেন, “বহু বছর পর এই জায়গায় আবার মসজিদের ভিত্তি স্থাপিত হচ্ছে—এটি আমাদের কাছে আবেগের।”
অন্যরা বলেন, “এই উদ্যোগ যদি শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষায় ভূমিকা রাখে, তাহলে এটাই হবে সবচেয়ে বড় অর্জন।”
প্রশাসনের প্রস্তুতি
বড় জনসমাগমের কারণে পুলিশ, র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সসহ প্রশাসনের বিভিন্ন ইউনিট উপস্থিত ছিল। যানজট এড়াতে বিকল্প রুট চালু করা হয় এবং আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পও স্থাপন করা হয়।
সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
এ ঘটনার পর স্থানীয় রাজনীতি ও সামাজিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ উদ্যোগকে শান্তিপূর্ণ ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতিফলন বলছেন, আবার কেউ বলছেন—এটি সংবেদনশীল সময়ের দাবি অনুযায়ী সতর্কতার সঙ্গে পরিচালিত হওয়া উচিত।
উপসংহার
মুর্শিদাবাদে বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শুধু ধর্মীয় উদ্যোগ নয়, বরং একটি বড় আকারের গণউদ্যোগে পরিণত হয়েছে। মানুষের ঢল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ প্রমাণ করেছে—দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরও সমাজে পারস্পরিক সমঝোতা ও শ্রদ্ধাবোধ বজায় রেখে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব।

