Thursday, December 18

নিবিড় নজরদারিতে থাকার তথ্য জানানো হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি হত্যাচেষ্টায় জড়িত প্রধান দুই সন্দেহভাজন। তারা হলেন—ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান এবং আলমগীর হোসেন।

হাদি হত্যাচেষ্টায় জড়িতদের ধরতে অর্ধকোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা, সীমান্তে বাড়তি সতর্কতা এবং পাসপোর্ট ব্লক করার খবর প্রকাশের মধ্যেই দুই ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ আততায়ী দেশ ছাড়ার তথ্য মিলেছে। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র তাদের পালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করলেও এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকারোক্তি আসেনি।

প্রযুক্তির চোখ ফাঁকি দিয়ে পালানোর কৌশল

তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, হামলার পরপরই ফয়সাল ও আলমগীরকে মূল সন্দেহভাজন হিসেবে শনাক্ত করে প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের গতিবিধি নজরদারিতে রাখা হয়। তবে তারা কৌশলে নিজেদের ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইস (মোবাইল ফোনসহ) নিজেরা বহন না করে অন্যভাবে সচল রেখে অবস্থান পরিবর্তন করাতে থাকে। ফলে ডিভাইসের লোকেশন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালালেও প্রকৃতপক্ষে তারা তখন ঢাকার বাইরে সরে যায়।

ধারণা করা হচ্ছে, এ সুযোগে তারা রাজধানী ছেড়ে ময়মনসিংহ হয়ে হালুয়াঘাট সীমান্তে পৌঁছায়।

পালানোর রুট

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সীমান্ত এলাকার স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, হামলার পর তারা পল্টনের কালভার্ট রোড থেকে মোটরসাইকেলে নয়াপল্টন, শাহবাগ, বাংলামটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট ও আগারগাঁও হয়ে মিরপুরে পৌঁছায়। সেখান থেকে প্রাইভেটকারে আশুলিয়া ও গাজীপুর হয়ে ময়মনসিংহ যায়। ময়মনসিংহ ব্রিজের পাড়ে বাহন পরিবর্তন করে আরেকটি প্রাইভেটকারে হালুয়াঘাটের ধারাবাজার এলাকায় পৌঁছে।

সেখান থেকে মোটরসাইকেলে ভুটিয়াপাড়া সীমান্ত এলাকায় গিয়ে রাত আড়াইটা পর্যন্ত অবস্থান করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পশ্চিম গারো পাহাড় জেলার তুরা এলাকায় প্রবেশ করে তারা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত তারা সেখানেই অবস্থান করছিল।

হামলার ঘটনা

গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে মোটরসাইকেলে আসা দুই আততায়ীর একজন রিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে। ফয়সাল গুলি চালায় এবং মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল আলমগীর। পরদিন পুলিশ ফয়সালের ছবি প্রকাশ করে তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে। এরই মধ্যে হামলায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

হাদির চিকিৎসা

সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ সোমবার দুপুরে শরিফ ওসমান হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তার চিকিৎসার ব্যয় রাষ্ট্র বহন করবে।

Leave A Reply


Math Captcha
53 + = 57