Sunday, December 21

ডেস্ক রিপোর্ট
টিভি উপস্থাপক ও সাংবাদিক জিল্লুর রহমান বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ একটি নতুন মোড়ের দিকে এগোচ্ছে এবং এখন বিপ্লবী সরকারের দাবি উঠেছে। সামনে আরও অনেক বড় ঘটনা ঘটতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। একই সঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন তিনি বাস্তবতা হিসেবে দেখছেন না।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।

জিল্লুর রহমান বলেন, “আজকে যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ যাচ্ছে, এটা নতুন কিছু নয়। এই পরিস্থিতি যে আসবে, তা আমি অনেক আগেই পূর্বাভাস দিয়েছিলাম। অনেকে এখনো নির্বাচন নিয়ে খুব আশাবাদী, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে—আমি নির্বাচন দেখি না। আমি এ কথা বহুবার বলেছি।”

তিনি আরও বলেন, “লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় আসবে—কবে, কী কারণে, কোনটা শোকের আর কোনটা আনন্দের, সে আলোচনায় না গেলেও এটা নিশ্চিত যে সামনে আরও অনেক কিছু ঘটবে।”

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখভাগের যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে জিল্লুর রহমান বলেন, যেকোনো মৃত্যু নিঃসন্দেহে কষ্টের, দুর্ভাগ্যজনক ও শোকাবহ। তবে সমাজ বা রাষ্ট্র কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাল—তা দিয়ে মৃত্যুর প্রকৃত যন্ত্রণা পরিমাপ করা যায় না।

তিনি বলেন, “কাকে কত সম্মান দেওয়া হলো, জানাজা কত বড় হলো, কোথায় দাফন করা হলো, রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা হলো কি না—এসবের সঙ্গে আসলে বাস্তব যন্ত্রণার কোনো সম্পর্ক নেই। যে চলে যায়, তার কষ্টটা সবচেয়ে বেশি বোঝে তার পরিবার, সন্তান, স্ত্রী, মা-বাবা ও ভাইবোন।”

রাষ্ট্রীয় আশ্বাস প্রসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, “রাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত কতটুকু দায়িত্ব নেয়, কত কথা দেয় আর কয়টা কথা রাখে—এটা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন থেকেই যায়।”

নিজের বক্তব্যের কারণে সমালোচনার বিষয়টিও তুলে ধরেন এই সাংবাদিক। তিনি বলেন, “কথা বলার অনেক বিপদ আছে। অনেকেই চায় না তাদের আশার বাইরে কোনো কথা বলা হোক। এমনকি রাজনৈতিক আলোচনা করতে গিয়ে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ মানুষের সঙ্গেও সম্পর্কের টানাপোড়েন হয়েছে। কিন্তু আমি আমার বক্তব্যে ধারাবাহিক।”

তিনি দাবি করেন, গত কয়েক বছর ধরে তিনি যে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ দিয়েছেন, তার অনেকটাই বাস্তবে ঘটেছে।

জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে জিল্লুর রহমান বলেন, “আবু সাঈদ ছিলেন এই অভ্যুত্থানের মূল নায়ক। যারা জীবন দিয়েছেন, প্রত্যেকটি জীবনই মূল্যবান। আবু সাঈদ যদি সেদিন বন্দুকের নলের সামনে দাঁড়িয়ে সাহস না দেখাতেন, তাহলে এই অভ্যুত্থান আদৌ অভ্যুত্থানের রূপ নিত কি না—সেটা বড় প্রশ্ন।”

রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কখনো জামায়াত-শিবির, কখনো বিএনপি, কখনো আওয়ামী লীগ বা এনসিপি—সবাই কথায় কথায় আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগের সময় যা অন্যায় হয়েছে, সেটাও বলেছি। এখন যা অন্যায় হচ্ছে, সেটাও বলছি। কারো দোষ-ত্রুটি থাকলে তা বলতেই হবে।”

তিনি আরও বলেন, “অনেকে এখন বড় বড় কথা বলছেন, বীর সেজেছেন। শেখ হাসিনার আমলে তাদের নাম-গন্ধও শোনা যায়নি। এখন হঠাৎ করেই অনেকেই বিপ্লবী হয়ে গেছেন।”

Leave A Reply


Math Captcha
− 1 = 1