জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনের প্রার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একাধিক স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এসব হুমকির স্ক্রিনশট ভাইরাল হয়।
ভাইরাল হওয়া স্ক্রিনশটগুলো হাতিয়ার চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদের ছেলে ইসরাত রায়হান অমি এবং তার অনুসারী রুপক নন্দীর ফেসবুক আইডি থেকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্ক্রিনশটে দেখা যায়, মেসেঞ্জারে ইসরাত রায়হান অমি লিখেছেন,
‘আবদুল হালিম আজাদকে নাকি গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করছে কতিপয় নেতা। হান্নান বল আর তানভির বল—যেই নেতাই হোক, খোদার কসম করে বললাম, উত্তর অঞ্চলে চলাচল হারাম হয়ে যাবে। আমাদের নেতাকর্মীরা ডাইরেক গিলে খেয়ে ফেলবে। এখনো ধৈর্য ধরে আছি। তোর নেতাকে এটা কপি করে পাঠাইছ।’
অন্যদিকে, রুপক নন্দী তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন,
‘হান্নান আগুন নিয়ে খেলা করো না, পরে পস্তাতে হবে। যারা আবদুল হালিম আজাদ চেয়ারম্যানকে ভালো জানে, তারা কখনো তোমাকে আস্ত রাখবে না। ভোট করা ঢুকাই দেবে ভেতর দিয়ে। এখনো শান্ত আছি। আমার নেতাকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে উত্তরাঞ্চলে তোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করব।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম আজাদ ও তার ছেলে ইসরাত রায়হান অমির মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অভিযুক্ত রুপক নন্দীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
হাতিয়া উপজেলা যুবশক্তির আহ্বায়ক মো. ইউসুফ রেজা জানান, সম্প্রতি চরঈশ্বর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান একটি চা-দোকানে বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি আবদুল হান্নান মাসউদকে ইঙ্গিত করে বলেন, ভোটের আগে অনেক জনপ্রিয় প্রার্থীকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি-ধমকি শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় সাবেক চেয়ারম্যানের ছেলে ও অনুসারীরা এসব স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। এ ঘটনায় দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন,
‘এ ধরনের হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও উদ্বেগজনক। বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছি। আশা করছি, সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জানতে চাইলে হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম বলেন,
‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। স্ক্রিনশটগুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’