সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত বাংলাদেশি সেনাসদস্য শামীম রেজার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। প্রিয়জন হারানোর বেদনায় স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হোগলাডাঙ্গী গ্রামে।
নিহত শামীম রেজা ওই গ্রামের আলমগীর ফকিরের ছেলে। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। শান্ত ও ভদ্র স্বভাবের শামীম এলাকাবাসীর কাছে ছিলেন অত্যন্ত পরিচিত ও প্রিয় মুখ।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে শামীম রেজার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, উঠানজুড়ে স্বজন ও প্রতিবেশীদের ভিড়। বাড়ির বাইরে বসে আহাজারি করছেন পরিবারের সদস্যরা। সদ্য নির্মিত একতলা বাড়ির ভেতরে শোকাহত মা ও স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। শোকের ভারে বাকরুদ্ধ পুরো পরিবার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শামীম রেজা ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে যোগ দেন। কর্মজীবনের শুরু থেকেই তিনি নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। চলতি বছরের ৭ নভেম্বর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে তিনি সুদানে যান। সেখানে দায়িত্ব পালনকালে সন্ত্রাসী হামলায় তিনি নিহত হন।
শামীম রেজার মৃত্যুর খবরে পাড়া-প্রতিবেশী, স্বজন, জনপ্রতিনিধি, মুক্তিযোদ্ধা এবং বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা তার বাড়িতে ছুটে এসে শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। একই সঙ্গে তারা দ্রুত শামীম রেজার মরদেহ দেশে আনার দাবি জানান।
নিহতের বাবা আলমগীর ফকির কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার সব শেষ হয়ে গেছে। আমার ছেলে দেড় বছর আগে বিয়ে করেছে, এখনো তার কোনো সন্তান হয়নি। কত স্বপ্ন ছিল ছেলেকে নিয়ে। অন্তত শেষবারের মতো আমার ছেলের লাশটা দেখতে চাই। ওর লাশটা যেন দেশে আনা হয়।”
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাহ উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “শামীমের মৃত্যুর খবরে আমরাও গভীরভাবে মর্মাহত। আশা করছি দ্রুতই তার মরদেহ দেশে আনা সম্ভব হবে।”
মো: মনজু শেখ
রাজবাড়ী

