ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ বন্ধ করে এ বিষয়ে আইন করা গেলে স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি কমবে এবং সেবার মান বাড়বে বলে মত দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর তোপখানায় বিএমএ ভবনে ‘সর্বস্তরে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে চাই দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ শীর্ষক আলোচনাসভায় তিনি এ কথা বলেন। আয়োজন করে ‘দুর্নীতিমুক্ত স্বাস্থ্য আন্দোলন’।
ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা—সবার চিকিৎসা দেশে বাধ্যতামূলক করতে হবে। এমন আইনই স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি কমাতে বড় ভূমিকা রাখবে। তাঁর দাবি, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের অল্প অংশ চিকিৎসায় ব্যয় হয়, বাকিটা লুটপাট হয়ে যায় দালাল-ঠিকাদার চক্রের হাতে। এই দুর্নীতি শুধু অর্থ নয়, মানুষের জীবনকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা জানান, প্রতিবছর চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রায় ৭ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায়। এই বৈষম্য কমাতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ চিকিৎসা সুরক্ষা এবং মধ্যবিত্তের এক অংশকে ভর্তুকি দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লায়ন্স ক্লাব ইন্টারন্যাশনালের প্রাক্তন ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর আশফাকুর রহমান, হ্যালক্রো গ্রুপ লিমিটেডের সাবেক কনসালটেন্ট মশিউর রহমান এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।
সভার শুরুতে সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ‘বৈষম্যহীন স্বাস্থ্য খাত, দুর্নীতিমুক্ত ক্রয় ব্যবস্থা’ শিরোনামের বই। বইটির দশটি অধ্যায়েই স্বাস্থ্য খাতের ক্রয়–বিক্রয়ে ঠিকাদার মিঠুর অনিয়ম–দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির আলোচনায় মিঠুর নাম বারবার আসে। জার্মানি দেখিয়ে যন্ত্রপাতি সরবরাহের শিপমেন্ট কাগজে পোল্যান্ড যোগ করা, আসলে চায়নার পুরোনো মেশিন এনে নতুন বলে দেওয়া—এ ধরনের জালিয়াতি তিনি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছেন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, সাংবাদিকরা অনেকবার তার বিরুদ্ধে রিপোর্ট করেও কার্যকর ব্যবস্থা দেখতে পাননি। বর্তমান সরকার তাকে জেলে নিলেও পরে মুক্তি পেয়েছেন। আগের সরকারের সময়ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সক্ষমতা ছিল না বলেই মন্তব্য করেন তিনি।