টানা ছয় ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর অবশেষে পুলিশি নিরাপত্তায় সচিবালয় ত্যাগ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার রাত ৮টা ১২ মিনিটে তিনি সচিবালয় থেকে বের হন। এর আগে ‘সচিবালয় ভাতা’ চালুর দাবিতে নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সচিবালয় এলাকা।
দুপুর ২টার দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ৩০০ থেকে ৪০০ নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয়ে জড়ো হয়ে মিছিলসহ অর্থ মন্ত্রণালয়ের চতুর্থ তলায় উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন এবং তাঁকে অবরুদ্ধ করেন। হ্যান্ডমাইকে আন্দোলনকারীরা সচিবালয় ভাতার দাবি তুলে নানা স্লোগান দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট বিক্ষুব্ধদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। বাঁশি বাজিয়ে কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলেও বিক্ষোভ আরও তীব্র হয়।
আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল কবির বিকেল ৫টার দিকে কর্মচারীদের উদ্দেশে বলেন,
“দুদক কি আমাদের চেয়ে শক্তিশালী? দুদক হোয়াটসঅ্যাপে জিও জারি করেছে। সচিবালয় ভাতার জিও ছাড়া আমরা এখান থেকে এক কদমও নড়ব না।”
অতিরিক্ত কাজের চাপ, নেই ওভারটাইম সুবিধা—কর্মচারীদের দাবি
অবরুদ্ধ করে রাখা কর্মচারীরা বলেন,
— “প্রতিদিনই বাড়তি নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হয়।”
— “ঘন ঘন রাজনৈতিক সমাবেশ, মিছিল ও নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে সচিবালয়ে কর্মীদের চাপ বহুগুণ বেশি।”
— “বিকেল ৫টার পরও রাত ৮-৯টা পর্যন্ত কাজ করতে হয়, কিন্তু কোনো ওভারটাইম নেই।”
তাঁরা আরও জানান, রাষ্ট্রপতি বা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে অতিরিক্ত কাজের জন্য বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা থাকলেও সচিবালয়ের কর্মীদের কোনো অতিরিক্ত সুবিধা নেই।
‘সচিবালয় ভাতা’ চালুর যৌক্তিকতা তুলে ধরলেন আন্দোলনকারীরা
কর্মচারীদের অভিযোগ,
রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের কেন্দ্রে থেকে উচ্চ দায়িত্ব, গোপনীয়তা, ঝুঁকি, বিশেষ ব্যয় ও অতিরিক্ত সময়ের কাজ বিবেচনায় ‘সচিবালয় ভাতা’ চালু করা ন্যায়সংগত দাবি।
অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ রাখার পর সন্ধ্যার পর জানানো হয়—আজই এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে, এমন আশ্বাস পাওয়ার পর পুলিশি নিরাপত্তায় তিনি সচিবালয় ত্যাগ করেন।

