Saturday, December 20

ঢাকা, ৯ ডিসেম্বর – আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণ যদি দায়িত্ব দেয়, বিএনপি আবারও দেশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্তভাবে লড়াই করবে।

ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি বলেন, “দুর্নীতি কিভাবে সাধারণ মানুষের জীবনকে কঠিন করে তুলেছে—তা বোঝার জন্য দূরে যাওয়ার দরকার নেই। চাকরিপ্রার্থীরা চাকরি খুঁজতে হিমশিম খাচ্ছে, কৃষক মাসের পর মাস সরকারি সেবা পেতে হাহাকার করছে, পরিবারগুলো হাসপাতালে ভোগান্তিতে পড়ছে, আর উদ্যোক্তারা ব্যবসা বাঁচাতে ঘুষ দিতে বাধ্য হচ্ছে।”

তারেক রহমান বলেন, “খাবারের দাম বাড়া, শিক্ষার মান কমে যাওয়া, সড়কে নিরাপত্তাহীনতা—সব কিছুর পেছনে একটাই কারণ: দুর্নীতি। এটি লাখো মানুষের প্রতিদিনের জীবনকে দমবন্ধ করে ফেলেছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই নতুন নয়, এটি বহু যুগের আলোচনার বিষয়। আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস সেই লড়াইয়ের কথা মনে করিয়ে দেয় এবং স্মরণ করায় বাংলাদেশ সত্যিকারের অগ্রগতি দেখিয়েছিল—বিশেষ করে বিএনপির আমলে।

তারেক রহমানের ভাষ্যে, রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফেরানো, সরকারি সেবা ও অর্থনীতিকে মুক্ত করার কাজ শুরু করেছিলেন। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানে আধুনিকায়ন, নতুন ক্রয় নীতিমালা, কঠোর আর্থিক আইন, শক্তিশালী অডিট ব্যবস্থা এবং পরিষ্কার নজরদারি চালু হয়। সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ ছিল ২০০৪ সালে ‘দুদক’ গঠন, যা দেশের জবাবদিহিতার বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত।

বিএনপির নেতৃত্বাধীন সময়কালে দুর্নীতি হ্রাসে যে বড় পরিবর্তনগুলি দেখা গেছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

  • শক্তিশালী অর্থ ব্যবস্থাপনা: বাজেট নিয়ন্ত্রণ, অডিট, ব্যাংকিং ও মানি লন্ডারিং-বিরোধী আইন।
  • স্বচ্ছ ক্রয় নীতি: প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র, নিয়মের মধ্যে সরকারি ক্রয়।
  • উন্মুক্ত বাজার: টেলিকম, মিডিয়া, বিমান পরিবহন ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
  • ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ: প্রশাসন কম জটিল ও জবাবদিহি বৃদ্ধি।

ভবিষ্যতে বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরও শক্তভাবে লড়াই করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে:

  • প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা: আদালত, দুদক, নির্বাচন কমিশন, সরকারি সেবা।
  • পুরোপুরি স্বচ্ছতা: উন্মুক্ত দরপত্র, সম্পদ বিবরণী, রিয়েল-টাইম অডিট।
  • বিচার ও আইন-শৃঙ্খলা সংস্কার: পেশাদার পুলিশিং, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি, ডিজিটাল তথ্য-প্রমাণ।
  • ই-গভর্ন্যান্স: লাইসেন্স, জমি, পেমেন্ট অনলাইনে।
  • হুইসলব্লোয়ার সুরক্ষা: অনিয়ম ফাঁসকারীদের নিরাপত্তা।
  • নৈতিক শিক্ষা: স্কুল-কলেজে সততার চর্চা অন্তর্ভুক্ত করা।
  • শক্তিশালী আর্থিক নজরদারি: ডিজিটাল ব্যয় ট্র্যাকিং ও স্বাধীন অডিট।

শেষে তিনি বলেন, “বহু বছর অব্যবস্থাপনার পর দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কঠিন হলেও বাংলাদেশের ইতিহাস প্রমাণ করে, সৎ নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও জনগণের সমর্থন একসঙ্গে আসলে পরিবর্তন সম্ভব। জনগণ যদি দায়িত্ব দেয়, বিএনপি আবারও সেই লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত।”

Leave A Reply


Math Captcha
− 1 = 2