ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ৭ ডিসেম্বর ভোটের তারিখসহ নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সময়সূচি নির্ধারণে বৈঠকে বসবে কমিশন। সাধারণত তফসিল নির্ধারণের দিনই তা ঘোষণা করা হলেও এবার ৭ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা কম।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম এম নাসির উদ্দিন ৮ থেকে ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে যেকোনো দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে তফসিল ঘোষণা করতে পারেন। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান ‘কালের কণ্ঠ’কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকার রোজা শুরুর আগেই ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন আয়োজনের অনুরোধ জানিয়েছে। সেই অনুযায়ী ভোটের ৬০ দিন আগে তফসিল ঘোষণা করতে ইসিকে আগামী সপ্তাহের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
ইতোমধ্যে সিইসি ঘোষণা দিয়েছেন—ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল প্রকাশ করা হবে।
নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারির ৮ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি রবিবার এবং ১২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার হওয়ায় মাঝামাঝি কোনো তারিখ—সম্ভবত ১০ ফেব্রুয়ারি—নির্বাচনের সম্ভাবনা বেশি।
গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একযোগে হওয়ায় ভোট গ্রহণের সময়সীমা ও গোপন কক্ষের সংখ্যা বাড়ানোর চিন্তা করছে ইসি। সকাল ৮টায় ভোট শুরুর পরিবর্তে সাড়ে ৭টা এবং বিকেল ৪টার পরিবর্তে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণের প্রস্তাব আছে—মোট ৯ ঘণ্টা।
আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক কর্মশালা স্থগিত
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে আজ বুধবার রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলনকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকা ‘সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সমন্বিত ভূমিকা’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালা স্থগিত করেছে সরকার। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
উপসচিব মো. শিমুল আকতার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনিবার্য কারণে কর্মশালাটি স্থগিত করা হয়েছে। কর্মশালায় দেশের সব ডিসি, এসপি, বিভাগীয় কমিশনার, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ইউএনও ও ওসিদের যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমান জানিয়েছেন, তিনিও আমন্ত্রিত ছিলেন এবং মঙ্গলবার স্থগিতের নোটিশ পেয়েছেন।
কর্মশালা স্থগিত হওয়া নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন থাকলেও নির্বাচন কর্মকর্তাদের ধারণা—বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা-ঘিরে সারা দেশে সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে সরকার এ মুহূর্তে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঢাকায় জড়ো করতে চাইছে না। তফসিল ঘোষণার পর কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

