Saturday, December 20

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ঢাকা শহরের অন্যতম চালিকাশক্তি হলো এখানকার সাধারণ মানুষ। অথচ সরকার তাদের ন্যূনতম অধিকার ও মর্যাদার প্রতিও কোনো দায়বদ্ধতা দেখাচ্ছে না। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তির রাহাত আলী শাহ (র.) খানকাহ প্রাঙ্গণের পাশে স্থাপিত গণসংহতি আন্দোলনের রিলিফ ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কড়াইল বস্তির সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা একটি বড় দুর্যোগ। সরকারের দায়িত্ব ছিল দ্রুত ধ্বংসস্তূপ সরানো এবং খোলা আকাশের নিচে থাকা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য অবিলম্বে তাঁবু, খাবার, চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। “আমরা সরকারকে ট্যাক্স দিই এই কারণেই—দুর্যোগে জনগণের পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু এখনো সেই উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না,” মন্তব্য করেন সাকি।

সাকি দাবি করেন, কড়াইল বস্তির ক্ষতিগ্রস্তদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করে খাবার, থাকার জায়গা, শীতবস্ত্র, চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান ও দ্রুত পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

তিনি আরও বলেন, যতদিন না বস্তিবাসীরা কাজে ফিরতে পারবেন এবং নিজেদের বাসস্থান পুনর্গঠন করতে পারবেন, ততদিন পর্যন্ত রাষ্ট্রকে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে। এটি দুর্যোগকালীন সময়ের অপরিহার্য অংশ।

ঢাকার বৈষম্যমূলক পরিস্থিতির কঠোর সমালোচনা করে সাকি বলেন, রাজধানী এখন ধনী-গরিবের চরম বৈষম্যের শহর। নীতিনির্ধারকদের কাছে ঢাকা যেন কেবল ধনীদের জন্য—ফলে শ্রমজীবী মানুষের আবাসন ও নিরাপত্তা উপেক্ষিত থাকে। কড়াইল বস্তিতে বড় দুর্ঘটনার পরও জাতীয় পর্যায়ে আলোচনার ঘাটতি এবং কার্যকর সমাধানের অভাবকে তিনি ‘গণবিরোধী মানসিকতা’ বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, “লাখো মানুষ কড়াইলে বাস করেন। তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থানের নিশ্চয়তা না থাকলে সরকারের অস্তিত্বের যৌক্তিকতাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়। শুধু বড় দালান দিয়ে শহর উন্নত হয় না। ছাত্র-তরুণদের ভবিষ্যৎ আজ বিপদে, সাধারণ মানুষের জীবন হুমকির মুখে।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা এবং কড়াইল বস্তির ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন। পরে জোনায়েদ সাকিসহ নেতা-কর্মীরা ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন।

Leave A Reply


Math Captcha
27 + = 28