Sunday, December 21

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘোষণা আজ সোমবার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের প্যানেল এ রায় দেবেন। এ মামলাটি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময়ে সংঘটিত অপরাধ নিয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায় হতে যাচ্ছে।

রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। হাইকোর্ট ও ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। ট্রাইব্যুনালের ভেতর-বাইরে পুলিশ ও র‍্যাবের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ, কারওয়ানবাজার রেলক্রসিং, মিরপুর, শাহবাগ, মগবাজার, গাবতলীসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করছে পুলিশ। তবে শহরে সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচল বজায় আছে; গণপরিবহন ও মেট্রোরেল সচল রয়েছে।

আজকের রায় সরাসরি সম্প্রচার করবে বিটিভি, রॉयটার্স ও ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজ। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় লাইভ দেখানোর ব্যবস্থা করেছে। রাষ্ট্রপক্ষ জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ও অন্য দুই আসামির বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। তারা সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের প্রত্যাশা করছে।

রায়ের আগে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, গত বছরের সহিংসতার ঘটনায় আনীত অভিযোগে ন্যায়বিচার চান তারা।

প্রসিকিউশন জানিয়েছে, আসামিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে ভিকটিমদের পরিবারকে দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম বলেন, আইন অনুযায়ীই এই আবেদন করা হয়েছে। প্রসিকিউশন বিশ্বাস করে, পাঁচটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আশা প্রকাশ করেছেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল খালাস পাবেন।

গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠনের পর আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়। তিন মাস ১৩ দিনের মধ্যে বিচার শেষ হয়। গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের সময় এক হাজার ৪০০ জনকে হত্যা ও ২৫ হাজার মানুষকে অঙ্গহানির নির্দেশনা, উসকানি ও ‘সুপিরিয়র কমান্ড রেসপনসিবিলিটি’সহ মোট পাঁচটি অভিযোগ গঠন করা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, রায় যাই হোক, তা কার্যকর হবে। রায়কে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে তা কঠোরভাবে দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।

Leave A Reply


Math Captcha
− 5 = 1