সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ধোপাজান (চলতি) নদে রাতের আঁধারে চলছে অবৈধ বালু লুট। গত ১৪ দিনে অর্ধশতাধিক ড্রেজার ব্যবহার করে প্রায় ২৫ কোটি টাকার বালু উত্তোলন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
বালু লুট বন্ধের দাবিতে গত ১৩ অক্টোবর বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পিয়ারপুল এলাকায় বেড়িবাঁধের ওপর মানববন্ধন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী। কর্মসূচির আয়োজন করে সামাজিক সংগঠন ‘এসো কাজ করি’।
প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, ধোপাজান নদ ইজারা দেওয়া হয়নি, তবুও অবাধে বালু উত্তোলন চলছে। এতে বেড়িবাঁধসহ আশপাশের স্কুল-কলেজ, ফসলি জমি ও জনবসতি ঝুঁকির মুখে।
২০১৮ সাল থেকে নদটি ইজারা দেওয়া বন্ধ রয়েছে। তবে ১১ অক্টোবর থেকে লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান বিআইডব্লিউটিএর অনুমতি নিয়ে প্রতি রাতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে। প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজে এই বালু ব্যবহারের অনুমতি পেলেও, বাস্তবে বালু দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, অক্ষয়নগর থেকে ডলুড়া পর্যন্ত নদীর দুই তীরে চলছে অবাধ বালু তোলা। রাতে ড্রেজার চালিয়ে প্রতিরাতে প্রায় ২.৫ লাখ ঘনফুট বালু লুট হচ্ছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১.৭৫ কোটি টাকা।
এ ঘটনায় স্থানীয় শ্রমিক ও পরিবেশ আন্দোলনের কর্মীরা বেশ কয়েকটি বালুভর্তি নৌকা আটক করলেও, প্রভাবশালীদের চাপে তা ছেড়ে দিতে হয়েছে বলে অভিযোগ।
বারকি শ্রমিক নেতা হাফিজুর রহমান বলেন, “সরকার ইজারা না দিয়ে এখন ভিট মাটি তোলার নামে খনিজ বালু লুটের অনুমতি দিয়েছে।”
শ্রমিক আন্দোলনের নেতা সাইফুল আলম সদরুল বলেন, “দুর্নীতিবাজ চক্র ইতিমধ্যে প্রায় আড়াই শ কোটি টাকার বালু লুট করেছে। এটি আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য।”
এ বিষয়ে লিমপিড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কর্মকর্তা রাশেদ আলম বলেন, “সরকার আমাদের মাটি ও বালু তোলার অনুমতি দিয়েছে। রাতে যারা তুলছে, তারা আমাদের কেউ না।”
বিশ্বম্ভরপুর থানার ওসি মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, “রাতে ড্রেজার চালানোর অভিযোগে অভিযান চালানো হয়েছে।”
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া জানান, “রাতে বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং বিষয়টি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।”

