Saturday, November 1

নিজস্ব প্রতিবেদক:
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী

তিনি জানান, জুবায়েদ তখনও জীবিত ছিলেন। বাঁচার আশায় তিনি দোতলার দরজায় নক করলেও কেউ সাড়া দেয়নি। এরপর তিনি তিনতলায় ওঠেন। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন বার্জিস শাবনাম বর্ষা, যিনি নিজ চোখে নিশ্চিত হতে চেয়েছিলেন তার মৃত্যু হয়েছে কি না।
জুবায়েদ তাকে অনুরোধ করেন, “আমাকে বাঁচাও।” তখন বর্ষা ঠান্ডা মাথায় বলেন,

“তুমি না মরলে আমি মাহিরের হতে পারব না।”

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম

তিনি বলেন, টিউশনির ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষার পরিকল্পনায়ই খুন হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জুবায়েদ হোসেন। ২৬ সেপ্টেম্বর বর্ষার বর্তমান প্রেমিক মাহির রহমান জুবায়েদের সঙ্গে তার সম্পর্ক জেনে যাওয়ার পর থেকেই হত্যার পরিকল্পনা শুরু হয়।
মাহির ও তার দুই বন্ধু ফারদিন আহমেদ এবং আইলান মিলে জুবায়েদকে খুন করেন।

পুলিশ জানায়, বর্ষা প্রথমে মাহিরের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। কিন্তু পরে জুবায়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হলে মাহিরকে ছেড়ে দেন। তবুও মাহিরকে ভুলতে না পেরে বর্ষা জুবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন, যাতে মাহিরের ভালোবাসা ফেরানো যায়।

উল্লেখ্য, নিহত জুবায়েদ হোসেন (শিক্ষাবর্ষ ২০১৯-২০) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী এবং কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি ছিলেন।

গত রোববার বিকেলে বর্ষার বাসায় টিউশনে যাওয়ার পথে জুবায়েদের সঙ্গে দেখা হয় মাহিরের। সেখানে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই জুবায়েদ ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন এবং পরে মারা যান।

ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরদেহ কুমিল্লার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়।

পুলিশ কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, “এ হত্যাকাণ্ডে কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই, এটি সম্পূর্ণ ত্রিভুজ প্রেমঘটিত। ঘটনাটির সঙ্গে বরগুনার মিন্নি হত্যাকাণ্ডের মিল রয়েছে।”

ঘটনার পর জুবায়েদের সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং তাঁতীবাজার মোড় অবরোধ করে রাখেন।
সেই রাতে পুলিশ বার্জাকে হেফাজতে নেয়, পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় মাহিরসহ আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

Leave A Reply


Math Captcha
6 + 3 =