গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণ, হামলা ও হত্যাযজ্ঞে প্রতিদিনই বাড়ছে প্রাণহানি ও অবকাঠামোর ধ্বংস। মসজিদ, গির্জা, মসজিদের ইমাম ও ইসলাম ধর্মের প্রচারকদের টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এতে বহু পাড়া-মহল্লা হয়ে পড়েছে উপাসনালয়হীন।
গাজার মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ২৩৩ জন ইমাম ও ইসলাম ধর্মের প্রচারককে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। একই সময়ে ধ্বংস করা হয়েছে ৮২৮টি মসজিদ এবং আরও ১৬৭টি মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া বোমা হামলায় তিনটি চার্চ ধ্বংস ও ২১ জন ফিলিস্তিনি খ্রিস্টান নিহত হয়েছেন।
গাজার মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল আল থাওয়াবতেহ তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন,
“মসজিদ, গির্জা, ইমাম ও ধর্মীয় নেতাদের ওপর পরিকল্পিত হামলা চালানো হচ্ছে। এর মাধ্যমে ধর্মীয় কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ ও প্রতিরোধের মূল ভিত্তিগুলো ধ্বংস করার চেষ্টা চলছে।”
তিনি আরও বলেন,
“ইমাম ও আলেমরা জাতীয় পরিচয় দৃঢ় করা, ঈমান জাগ্রত রাখা এবং সামাজিক সংহতি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাদের হত্যার মাধ্যমে গাজাবাসীর মনোবল দুর্বল করা এবং ইসরায়েলের অপরাধ চিহ্নিতকারী আওয়াজকে নীরব করা হচ্ছে।”
শতাব্দী প্রাচীন ধর্মীয় স্থাপনা ধ্বংসের ফলে ফিলিস্তিনিদের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সামাজিক পরিচয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি শুধু শারীরিক ধ্বংস নয়, বরং ফিলিস্তিনিদের সমষ্টিগত স্মৃতি মুছে ফেলার প্রচেষ্টা—যা তাদের অস্তিত্বের জন্য বড় হুমকি।
আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোম স্ট্যাটিউট অনুযায়ী ধর্মীয় স্থানে ইচ্ছাকৃত হামলা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, যা যুদ্ধাপরাধের আওতাভুক্ত হতে পারে।
সূত্র: টিআরটি ওয়ার্ল্ড