Sunday, December 21

ময়মনসিংহের ভালুকায় শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কারখানার দুই ইনচার্জসহ মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দিনগত রাত ৩টার দিকে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন— ভালুকার হবিরবাড়ী ইউনিয়নের ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার্স নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ মো. আলমগীর হোসেন (৩৮), কোয়ালিটি ইনচার্জ মো. মিরাজ হোসেন আকন (৪৬), শ্রমিক মো. তারেক হোসেন (১৯), মো. লিমন সরকার (২২), মো. মানিক মিয়া (২০), এরশাদ আলী (৩৯), নিঝুম উদ্দিন (২০), আজমল হাসান সগীর (২৬), শাহিন মিয়া (১৯) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মো. নাজমুল (২১)।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে র‍্যাব-১৪’র সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি নয়মুল হাসান জানান, ঘটনার সূত্রপাত হয় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেল চারটার দিকে। ওই সময় কারখানার ফ্লোর ইনচার্জ দিপু চন্দ্র দাসকে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে উত্তেজিত জনতার হাতে তুলে দেন।

তিনি বলেন, “তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর না করে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত না করায় কারখানার সংশ্লিষ্ট দুই কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

র‍্যাব অধিনায়ক আরও বলেন, ধর্ম অবমাননার অভিযোগটি এখনো অস্পষ্ট। দিপু কী বলেছেন— এ বিষয়ে কেউ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি। পূর্বশত্রুতা ছিল কি না এবং প্রকৃত কারণ কী— তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করেই আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার পেছনের প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে কটূক্তির অভিযোগ তুলে দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহে আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার পর ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে অর্ধদগ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে নিহতের ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ভালুকা মডেল থানায় ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় পুলিশ আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।

Leave A Reply


Math Captcha
11 − 1 =