Saturday, December 20

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) নিয়মিত কর্মকর্তা–কর্মচারীরা আগামী শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি এবং যাত্রী সেবা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা প্রণয়ন ও প্রকাশ না হওয়ায় পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী তারা এ সিদ্ধান্ত নেন। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। কর্মবিরতির পাশাপাশি প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিও পালন করবেন কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।

জানা যায়, ২০১৩ সালে ডিএমটিসিএল প্রতিষ্ঠার পর ১২ বছর পার হলেও ৯০০–র বেশি কর্মকর্তা–কর্মচারীর জন্য এখনো কোনো স্বতন্ত্র চাকরি-বিধিমালা চূড়ান্ত হয়নি। মেট্রোরেলের বাণিজ্যিক অপারেশন শুরু হওয়ার পর থেকে দিন-রাত দায়িত্ব পালন করলেও তারা ছুটি, সিপিএফ, গ্র্যাচুইটি, শিফট-অ্যালাউন্স/ওভারটাইম, গ্রুপ ইনস্যুরেন্সসহ নানামুখী মৌলিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত বলে অভিযোগ করেছেন।

২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে সার্ভিস রুল প্রণয়ন করার কথা ছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি। পরে ২০২৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি কর্মচারীরা আন্দোলনে নামলে ২০ ফেব্রুয়ারি কর্তৃপক্ষ ২০ মার্চের মধ্যে সার্ভিস রুল চূড়ান্তের আশ্বাস দেয়। সেটিও বাস্তবায়িত না হওয়ায় গত নয় মাস ধরে কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ জমে ওঠে।

গত ১০ ডিসেম্বর কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, সার্ভিস রুলের অধিকাংশ ধারায় পরিচালনা পর্ষদ একমত হলেও ‘বিশেষ বিধান’ সংক্রান্ত একাদশ অধ্যায়ই মূল বাধা। এই অধ্যায়ে মেট্রোরেল প্রকল্পের জনবলকে ডিএমটিসিএলে আত্মীকরণের বিষয় রয়েছে, যা কর্মচারীদের দাবি অনুযায়ী দেশের প্রচলিত আইন ও সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাদের অভিযোগ, পরিচালনা পর্ষদ বিতর্কিত বিধান বাদ দিতে রাজি থাকলেও ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষের চাপের কারণেই সার্ভিস রুল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে।

পূর্বঘোষিত আলটিমেটাম অনুযায়ী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে সার্ভিস রুল প্রকাশ না হওয়ায় কর্মচারীরা জানান, ১১ ডিসেম্বরের মধ্যেও সার্ভিস রুল চূড়ান্ত না হলে ১২ ডিসেম্বর শুক্রবার ভোর ৭টা থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে এবং মেট্রোরেলের সব যাত্রী সেবা বন্ধ থাকবে। এতে দৈনিক কয়েক লাখ যাত্রীর ভোগান্তি সৃষ্টি হলেও কর্মচারীরা বলেন, এর সম্পূর্ণ দায় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। তাদের দাবি, চাকরি-বিধিমালা ছাড়া ক্যারিয়ার, বেতন-সুবিধা ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত নয়—তাই আশ্বাস নয়, প্রকাশিত সার্ভিস রুলই একমাত্র সমাধান।

Leave A Reply


Math Captcha
6 + = 16