রাজধানীর বাজারে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। এক কেজি পেঁয়াজ ১৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। গত এক সপ্তাহে প্রতি কেজিতে বাড়তি ২০–৩০ টাকা যোগ হয়েছে। দোকানিদের দাবি, নতুন পেঁয়াজ বাজারে এখনো আসেনি এবং আমদানির অনুমতি না মেলায় দাম বেড়েছে।
শনিবার কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর টাউন হল, কৃষি মার্কেট ও উত্তরা হজ ক্যাম্পসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে পেঁয়াজের বাড়তি দামের বিষয়টি জানা যায়। কারওয়ান বাজারে ভালো মানের পুরোনো পেঁয়াজ এক পাল্লা বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়; খুচরায় দাম কেজিপ্রতি ১৪০–১৬০ টাকা। কিছু দোকানে আগাম পেঁয়াজ পাওয়া গেলেও দাম ১২০–১৩০ টাকা।
পেঁয়াজ বিক্রেতা নীরব মিয়া জানান, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে নতুন পেঁয়াজ বাজারে এলে দাম ৭০–৮০ টাকায় নেমে আসবে। প্রতিবছরের মতো এবারও মৌসুমে দাম বেড়েছে। ভারত থেকে পেঁয়াজ না আসায় সরবরাহ কম—এটাই দাম বাড়ার মূল কারণ।
মোহাম্মদপুর ও উত্তরা এলাকায় কেজিপ্রতি ১৫০–১৬০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজার থেকেই তাঁদের কিনতে হচ্ছে ১৪০–১৪৮ টাকায়।
পাবনায় পাইকারি দাম
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার বোয়ালমারী বাজারে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার হঠাৎ করে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়ে যায়। শুক্রবার পাইকারিতে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৪,৫০০–৪,৬০০ টাকায় (প্রতি কেজি ১১২–১১৫ টাকা) বিক্রি হয়, যেখানে বুধবার দাম ছিল ৩,৪০০–৩,৫০০ টাকা। তবে শনিবার সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় নেমেছে।
শুক্রবার দাম বেশি দেখে অনেক কৃষক অপুষ্ট আগাম ‘মুড়িকাটা’ পেঁয়াজ আগেভাগে তুলে বাজারে আনেন। এসব পেঁয়াজ ১২০–১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ আসায় সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে।
নভেম্বর–ডিসেম্বরে দাম বাড়ার কারণ
ট্যারিফ কমিশনের বিশ্লেষণে চারটি কারণে প্রতিবছর এই সময়ে পেঁয়াজের দাম বাড়ে—
১. মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য:
উৎপাদন থেকে বাজার পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে বারবার হাতবদলে বাড়তি দাম যোগ হয়।
২. সংরক্ষণের অভাব:
জানুয়ারি–এপ্রিল সংরক্ষণের মৌসুম হলেও সরকারি কোনো স্টোরেজ না থাকায় কৃষক নিজ উদ্যোগে সংরক্ষণ করেন—ফলে ঘাটতি তৈরি হয়।
৩. মৌসুমের শেষ পর্যায়:
নভেম্বর–ডিসেম্বরে কৃষকের ঘরে মজুত কম থাকে।
৪. বৃষ্টি:
পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলা–পাবনা, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মেহেরপুরে গত মাসে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে প্রচুর আগাম পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে।

