আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১১ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণা করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত সাতটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়নি, এবং এখন আর সে সম্ভাবনাও নেই।
ইসির রোডম্যাপ অনুযায়ী, ১৩ থেকে ১৯ নভেম্বর আট পর্বের সংলাপে ৪৮টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও তৃণমূল বিএনপি সংলাপে উপস্থিত হয়নি।
নিবন্ধিত দল সংখ্যা ৫৫টি হলেও ৭টি দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এগুলো হলো—
- জাতীয় পার্টি (জাপা)
- জাসদ
- ওয়ার্কার্স পার্টি
- সাম্যবাদী দল
- জাতীয় পার্টি-জেপি (মঞ্জু)
- তরীকত ফেডারেশন
- গণতন্ত্রী পার্টি
ইসি সূত্র বলছে, অতীতে “প্রহসনমূলক নির্বাচনে” অংশ নেওয়ায় এসব দলকে সংলাপে ডাকা হয়নি।
ইসির নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানান, জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে কমিশন নিজেই “সন্ধিহান”।
তিনি বলেন,
“কে সত্যিকার অর্থে দলটির প্রতিনিধিত্ব করছে তা পরিষ্কার নয়। তারা নিজেরাই আমাদের জানাবে। পরিস্থিতি জটিল হওয়ায় তাদের ডাকা হয়নি।”
তিনি আরও জানান, তফসিলের পর সংলাপে বসার কোনো নিয়ম বা সুযোগ নেই।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী অভিযোগ করেন,
“গণঅধিকার পরিষদের ইঙ্গিতেই ইসি আমাদের ডাকেনি। যার নিবন্ধন বৈধ, তাকে ডাকা বাধ্যতামূলক। ইসি কাপুরুষতার পরিচয় দিয়েছে।”
এর আগে গণঅধিকার পরিষদ জাপা ও ১৪ দলীয় শরিকদের সংলাপে না ডাকার দাবি জানায়।
ইসির কমিশনার বলেন,
“আইনত নিষিদ্ধ না হওয়ায় জাতীয় পার্টি ও বাদ পড়া দলগুলো চাইলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে।”
ইসির সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলো জামানত কমানো, ব্যয়সীমা বাস্তবায়ন, সিসি ক্যামেরা স্থাপন, জোটের একক প্রতীকে অংশগ্রহণের সুযোগ, পোস্টার-ব্যানার ব্যবস্থাপনা, বিভাগভিত্তিক ভোট আয়োজনসহ নানা প্রস্তাব দেয়।
একাধিক দল মন্তব্য করে,
- জামানত ৫০ হাজার টাকা করা ছোট দলগুলোর জন্য কষ্টকর
- ব্যয়সীমা বাস্তবে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন
- আরপিও সংশোধনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পূর্ব আলোচনা হয়নি
তবে এসব দাবি উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন জানায়,
“আরপিও ও আচরণবিধিতে যেসব সংশোধন করা হয়েছে, তা-ই বহাল থাকবে। সিদ্ধান্তে আমরা অটল।”
- ১১ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনা
- সংলাপ ছাড়াই বাদ ৭টি নিবন্ধিত দল
- জাতীয় পার্টিকে না ডাকার কারণ—অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও অস্পষ্ট নেতৃত্ব
- তফসিলের পর সংলাপের আর সম্ভাবনা নেই
- বাদ পড়া দলগুলো চাইলে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে
- সংলাপে অংশ নেওয়া দলগুলোর বহু দাবি—ইসির কাছে গুরুত্ব পায়নি

