Sunday, December 21

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অধ্যাদেশ, ২০২৫ থেকে ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ গঠনের কৌশলগত সুপারিশ বাদ দেওয়ায় গভীর ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি প্রশ্ন তুলেছে—“সংস্কারের নামে সরকারের অবস্থান কি প্রমাণ করে যে রাষ্ট্রসংস্কার তাদের কাছে শুধুই ফাঁকাবুলি?”
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবি এই প্রতিক্রিয়া জানায়।

জুলাই সনদে ঐকমত্য থাকলেও সুপারিশ বাদ

বিবৃতিতে টিআইবি জানায়, জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বসম্মত মতামত এবং দীর্ঘদিনের দাবির ভিত্তিতে সংস্কার কমিশন দুদকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ প্রস্তাব করেছিল। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও এতে সম্মতি দিয়েছিল।
কিন্তু চূড়ান্ত অধ্যাদেশে গুরুত্বপূর্ণ এই সুপারিশ বাদ দেওয়া হয়েছে, যা টিআইবির মতে—সংস্কারবিরোধী মহলের ষড়যন্ত্র এবং রাষ্ট্রসংস্কার প্রক্রিয়ার “জিম্মিদশা” নির্দেশ করে।

‘দুদক ক্ষমতাসীনদের রক্ষাকবচে পরিণত হয়েছিল’ — টিআইবি

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গত দুই দশকের অভিজ্ঞতায় দুদক জনআস্থা হারিয়েছে; বরং অনেক সময় ক্ষমতাসীনদের সুরক্ষা দেওয়া ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
তিনি বলেন,
“এই অচলায়তন ভাঙতেই স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ‘বাছাই ও পর্যালোচনা কমিটি’ প্রয়োজন ছিল। এটি ছয় মাস অন্তর মূল্যায়ন ও গণশুনানির মাধ্যমে দুদকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করত। সরকারের এই সুপারিশ বাতিল রাষ্ট্রসংস্কারের অঙ্গীকারের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।”

সাতজন উপদেষ্টার বিরোধিতা—রাজনৈতিক ঐকমত্য উপেক্ষিত

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে অন্তর্বর্তী সরকারের কমপক্ষে সাতজন উপদেষ্টা প্রস্তাবটির বিরোধিতা করেছেন, যদিও জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারী রাজনৈতিক দলগুলো এতে একমত ছিল।
ড. ইফতেখারুজ্জামান প্রশ্ন তোলেন—
“এত রক্তক্ষয়ী আন্দোলন ও আত্মত্যাগের পর দুর্নীতি দমনের পথ রুদ্ধ করে রাষ্ট্রসংস্কার কিভাবে সম্ভব?”

টিআইবির আশঙ্কা, সরকারের এই সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে জুলাই সনদ লঙ্ঘনে উৎসাহিত করবে এবং সামগ্রিকভাবে সংস্কার প্রক্রিয়াকে দুর্বল করবে।

Leave A Reply


Math Captcha
63 + = 64