Sunday, December 21

জুলাই গণঅভ্যুত্থনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ঘোষিত রায়ের কপি আগামী মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এবং রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের কাছে কেন্দ্রীয় কারাগারেও রায়ের কপি পাঠানো হবে।

এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) হওয়ায় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১—বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারপতি মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে এ রায় ঘোষণা করা হয়। ছয় অধ্যায়ে ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায় দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে পড়া শুরু হয় এবং দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটের সংক্ষিপ্ত রায় শেষে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে রায় ঘোষণা করা হয়।

মামলার অগ্রগতি

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠনের পর প্রথম মামলা হিসেবে জুলাই গণঅভ্যুত্থনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।

গত বছরের ১৭ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হয় এবং সেদিনই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

পরবর্তীতে ১৬ মার্চ সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ে ১২ মে এবং ১ জুন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। পাঁচটি অভিযোগে ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়।

অভিযোগগুলো ছিল—

  • গণভবনে উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান
  • হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূলের নির্দেশ
  • রংপুরে আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা
  • চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে হত্যা
  • আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর ঘটনা

শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক থাকলেও সাবেক আইজিপি মামুনই মামলার একমাত্র গ্রেপ্তার আসামি। যুক্তিতর্ক শেষে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন। তবে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন তাদের খালাস আবেদন করেন। রাজসাক্ষী মামুনের পক্ষ থেকেও খালাস আবেদন করা হয়।

রায় ঘোষণা শেষে আজ রায়ের কপি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

Leave A Reply


Math Captcha
+ 46 = 47