Monday, December 22

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার ঠিক আগমুহূর্তে সমর্থকদের উদ্দেশে এক অডিও বার্তা দিয়েছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি অভিযোগ করেছেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ‘মিথ্যা’ এবং তাকে রাজনৈতিকভাবে নিশ্চিহ্ন করার উদ্দেশ্যেই এসব করা হচ্ছে। ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বিষয়টি জানা গেছে।

আসামির পক্ষ থেকে আদালতে হাজির না হলেও অডিও বার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, রায় নিয়ে তার কোনো উদ্বেগ নেই। তার দাবি, নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগকে “শেষ করে দিতে” চাইছে।

৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনা বলেন, “আওয়ামী লীগ শেকড় থেকে উঠে এসেছে, কোনো ক্ষমতাদখলকারীর পকেট থেকে না। আমাদের এত সহজে শেষ করা যাবে না।” তিনি জানান, প্রতিবাদের ডাক দেওয়ার পর দেশজুড়ে সমর্থকদের সাড়া তাকে আশ্বস্ত করেছে।

তিনি ইউনুসের বিরুদ্ধে ক্ষমতা দখলের অভিযোগ এনে বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচিত প্রতিনিধিকে জোর করে অপসারণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তার দাবি, “ইউনুস খুব পরিকল্পনা করে এই কাজটাই করেছে।”

২০২৪ সালের সহিংস বিক্ষোভের সময় ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনার পর শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দিল্লিতে নির্বাসনে যান। তার বিরুদ্ধেই পরবর্তীতে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা হয়। ঢাকায় আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিলেও তিনি তা অমান্য করেন।

অডিও বার্তায় তিনি আরও বলেন—
“চিন্তার কিছু নেই। আমি বেঁচে আছি, বেঁচে থাকব, আবার মানুষের কল্যাণে কাজ করব। বাংলাদেশেই বিচার করব।”

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নাকচ করে তিনি বলেন, “১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি—এরপরও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ?”

ইউনুস সরকারের সাধারণ ক্ষমার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এতে বিভিন্ন হত্যা মামলার ভুক্তভোগী পরিবার ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

গণভবনে ভাঙচুর–লুটপাটের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “গণভবন সরকারি সম্পত্তি। লুটেরা–সন্ত্রাসীরা কোনোদিন বিপ্লব করতে পারে না।”

অবশেষে তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন—
“রায় দিক, আমার কিছু যায় আসে না। আমি জনগণের সঙ্গে আছি। সময়ের ব্যাপার মাত্র। তোমরা কষ্ট পাচ্ছ—আমরা ভুলব না, হিসাব হবে।”

বার্তা শেষ করেন দলীয় স্লোগান দিয়ে—
“জয় বাংলা, জয় বাংলাদেশ।”

Leave A Reply


Math Captcha
+ 73 = 77