আন্তর্জাতিক ডেস্ক
বিদেশি নাগরিকদের গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা দিতে নতুন আইন আনছে কানাডা সরকার। বিশেষ করে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকদের লক্ষ্য করেই এই পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম সিবিসি নিউজ।
কানাডার ক্ষমতাসীন মার্ক কার্নি সরকার ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত একটি বিল পার্লামেন্টে উত্থাপন করেছে। বিলটি পাস হলে ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’-এর মাধ্যমে বিদেশিদের গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা আইনগতভাবে স্বীকৃতি পাবে।
সিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কানাডার ইমিগ্রেশন, রিফিউজি অ্যান্ড সিটিজেনশিপ কানাডা (আইআরসিসি) ও কানাডা বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। তাদের গঠিত এই ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ’-এর কাজ হলো ভারত ও বাংলাদেশ থেকে আসা প্রতারণামূলক বা সন্দেহজনক ভিসা আবেদন চিহ্নিত করে বাতিল করা।
সরকারি নথি অনুযায়ী, যুদ্ধ, মহামারি কিংবা বিশেষ পরিস্থিতিতে ‘নির্দিষ্ট দেশের ভিসাধারীদের’ গণহারে ভিসা বাতিলের ক্ষমতা প্রয়োগ করা হতে পারে। যদিও অভিবাসনমন্ত্রী লেনা দিয়াব দেশগুলোর নাম উল্লেখ করেননি।
ইতিমধ্যে ভারতীয় আবেদনকারীদের ওপর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে কানাডা। চলতি বছরের আগস্টে উচ্চশিক্ষার জন্য কানাডায় যেতে ইচ্ছুক প্রায় ৭৪ শতাংশ ভারতীয় শিক্ষার্থীর ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজনই ভিসা পাননি।
এছাড়া ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে ভারতীয় নাগরিকদের রাজনৈতিক আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) আবেদন হঠাৎ বেড়ে গেছে। ২০২৩ সালের মে মাসে মাসে গড়ে ৫০০ আবেদন জমা পড়লেও ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা বেড়ে প্রায় ২ হাজারে পৌঁছেছে।
আবেদনের এই বৃদ্ধির কারণে ভিসা যাচাই ও প্রক্রিয়াকরণে সময় দ্বিগুণ বেড়েছে—২০২৩ সালের জুলাইয়ে যেখানে গড়ে ৩০ দিন লাগত, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ দিন। ফলে অনুমোদনের সংখ্যা কমে যায়। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যেখানে ৬৩ হাজারের বেশি অনুমোদন দেয়া হয়েছিল, জুনে তা নেমে আসে প্রায় ৪৮ হাজারে।
বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বিলটি আইনে পরিণত হলে বাংলাদেশ ও ভারতের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।
তথ্যসূত্র: এনডিটিভি, সিবিসি নিউজ

