Saturday, November 1

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রতিনিধি দল বুধবার (২২ অক্টোবর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে যোগ দিতে গেলেও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা হয়নি।

দুপুরে আন্দোলনরত ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে গেলে শিক্ষা উপদেষ্টা তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে রাজি হননি। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান এবং সদস্য সচিব মাওলানা মো. আল আমিন।

একজন আন্দোলনরত শিক্ষক বলেন, “আমরা রাজপথ থেকে এসেছি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। তাই এখন আমরা শাহবাগে গিয়ে বিক্ষোভ করবো এবং শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানাবো।”

জানা গেছে, প্রতিনিধি দলে নীলফামারী, চট্টগ্রাম, বগুড়া, ভোলা, নেত্রকোনা, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, পিরোজপুর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, বরগুনা, সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষক নেতারা ছিলেন।

শিক্ষকরা জানান, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরি। পাশাপাশি, এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠানো ১ হাজার ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ফাইল দ্রুত অনুমোদনের দাবি জানান তারা।

অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—

  • অনুদানবিহীন স্বীকৃত ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিও আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ,
  • প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি,
  • এবং ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জন্য আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন।

এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকায়। এ সময় প্রেস ক্লাব এলাকায় পুলিশ ও শিক্ষকরা মুখোমুখি অবস্থান নেয় এবং সেখানে জলকামান ও রায়ট কার মোতায়েন করা হয়। এতে প্রেস ক্লাব থেকে পল্টনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।

অবস্থানকারীরা অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর জাতীয়করণের দাবি জানানো হলেও বাস্তব কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। ফলে শিক্ষকরা চরম অর্থকষ্টে ও অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।

শিক্ষক নেতারা জানান, দেশের হাজারো স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষক মাসের পর মাস বিনা বেতনে কাজ করছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে সামান্য সম্মানী পেলেও তা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয়। তারা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে ইসলামী শিক্ষা সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখলেও সরকারের অবহেলায় তারা বারবার বঞ্চিত হচ্ছেন।

শিক্ষকরা হুঁশিয়ারি দেন, এবারও যদি জাতীয়করণের ঘোষণা বাস্তবায়িত না হয়, তবে তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পর অনশন শুরু করবেন। একই সঙ্গে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার কাঠামো ও প্রশাসনিক স্বীকৃতি দ্রুত নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তারা।

তাদের দাবি, সরকার দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে তারা আরও কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন।

Leave A Reply


Math Captcha
− 7 = 1