দীর্ঘ দুই বছর পেরিয়ে আজও জ্বলছে গাজা উপত্যকা।

দু’বছর আগে ঠিক এই দিনে হামাসের আকস্মিক হামলায় হতভম্ব হয়ে পড়ে ইসরায়েল। এর জবাবে ইসরায়েলিদের পাল্টা আক্রমণে গাজা উপত্যকা পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।

বিশ্লেষকদের মতে, হামাসের ওই হামলার প্রভাব কেবল গাজায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বে। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যে আরও একজোট হয়েছে ইরান, হিজবুল্লাহ ও হুতিসহ ইসরায়েলবিরোধী বিভিন্ন শক্তি।

এতদিন প্রক্সি যুদ্ধেই সীমাবদ্ধ থাকলেও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ঐতিহাসিক হামলার পর সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়েছে ইরান ও ইসরায়েল। যুদ্ধের প্রভাব ছড়িয়ে পড়েছে লেবানন, সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনসহ মধ্যপ্রাচ্যের নানা দেশে।

চ্যাথাম হাউসের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা কর্মসূচির পরিচালক ড. সানাম ভাকিল বলেন, গত দুই বছরে মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক ঘটনা ঘটেছে যা ‘রেড লাইন’ অতিক্রম করেছে। ইরান সরাসরি ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রও তাতে হস্তক্ষেপ করেছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাতেও হামলা হয়েছে, ফলে পুরো অঞ্চল ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ শুরুতে ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন দিলেও, গাজায় সীমাহীন হামলা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় সেই ঐক্যে ফাটল ধরেছে। পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ চলছে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বাড়ছে ইসরায়েলবিরোধী মনোভাব।

জাতিসংঘে গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে মার্কিন ভেটো ব্যবহার পশ্চিমাদের দ্বিচারিতাকে আরও স্পষ্ট করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এই অবস্থায় শক্তিশালী হচ্ছে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো, আর বিশ্ব রাজনীতি ধীরে ধীরে একমেরু থেকে বহুমেরুভিত্তিক হয়ে উঠছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *