গাজায় ফিলিস্তিনিদের জন্য মানবিক সহায়তা নিয়ে যাওয়া ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-তে ইসরাইলি হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিশ্বজুড়ে। তুরস্ক এ ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। ইতালি, জার্মানি, স্পেন, তুরস্ক ও গ্রিসসহ বহু দেশে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। লাতিন আমেরিকার আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো ও কলম্বিয়াতেও রাস্তায় নেমেছে হাজারো মানুষ।
বুধবার গভীর রাতে গাজামুখী নৌবহরে ইসরাইলি নৌবাহিনীর বাধা ও হামলার ঘটনা ঘটে। বহরের বেশ কয়েকটি জাহাজ থামিয়ে তাতে উঠে পড়ে ইসরাইলি নৌ সেনারা। বন্ধ করে দেয়া হয় নৌযান থেকে চলমান সরাসরি সম্প্রচার। পরে নৌযানে থাকা মানবাধিকার কর্মীদের আটক করে সেখানেই প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ পরিবেশকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও। ইসরাইলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামাজিক মাধ্যমে জানায়, আটককৃতদের ইসরাইলের একটি নৌবন্দরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
ঘটনার পরপরই তুরস্ক একে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে নিন্দা জানায়। ব্রিটিশ লেবার পার্টির সাবেক নেতা ও বর্তমানে ইয়োর পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন একে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছেন। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ এটিকে ‘অপহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
গাজামুখী ত্রাণবহর আটকানোর পর ইতালির রাজধানী রোমে রাতেই হাজারো মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ করে। দেশটির সবচেয়ে বড় শ্রমিক ইউনিয়ন শুক্রবার ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে। পাশাপাশি বিক্ষোভ হয়েছে জার্মানি, তুরস্ক, গ্রিসসহ আরও কয়েকটি দেশে।
৪৫টিরও বেশি বেসামরিক নৌযান নিয়ে গঠিত এই বহরে প্রায় ৫০০ যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিভিন্ন দেশের আইনপ্রণেতা ও মানবাধিকারকর্মীরা। ফ্লোটিলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নৌবহরের অন্তত ১৩টি জাহাজ আটক করেছে ইসরাইলি নৌবাহিনী, এবং সেখানকার দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবককে ইসরাইলের একটি বন্দরে নেয়া হয়েছে।
ঐতিহাসিক এই মিশনে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অংশ নেন আলোকচিত্রী, শিল্পী ও সমাজকর্মী শহিদুল আলম। তিনি ফেসবুক লাইভে নৌযানে ইসরাইলি হস্তক্ষেপের বিষয়টি জানান।