সাংবিধানিক বিধি পাশ কাটিয়ে ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্য এবং এর রাজধানী শিকাগোতে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ইলিনয়েস রাজ্য প্রশাসন।
গতকাল (সোমবার) ইলিনয়েসের উচ্চ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। রাজ্যের গভর্নর জে. বি. প্রিৎজকার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “রাজ্য প্রশাসন মনে করছে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অপ্রয়োজনীয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। এই কারণেই মামলা করা হয়েছে।”
ইলিনয়েসে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রভাব শক্তিশালী, এবং দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজনৈতিক চাপে ফেলতে সেনা মোতায়েনের পথ বেছে নিয়েছেন।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথকে নির্দেশ দেন ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে ন্যাশনাল গার্ডের ৩০০ সদস্য মোতায়েনের জন্য। পরে টেক্সাস থেকে আরও ৪০০ সেনা সদস্য পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি।
এর আগে ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প নথিবিহীন অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন। এরপর থেকেই মার্কিন পুলিশ ও কাস্টমস বাহিনী অভিবাসী-বিরোধী অভিযান শুরু করে, যেখানে সেনাদেরও সহায়তা দিতে বলা হয়।
ইলিনয়েস ও শিকাগোতে সেনা মোতায়েন নিয়ে সমালোচনার জবাবে ট্রাম্প বলেন,
“অস্থিরতা ও বিদ্রোহ দমনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে ইনসারেকশন অ্যাক্ট ১৭৯২ অনুযায়ী সেনা মোতায়েনের বিধান আছে।”
তবে আইনটি অনুসারে, কেবলমাত্র কোনো অঙ্গরাজ্যে চরম অস্থিরতা বা বিদ্রোহ শুরু হলে প্রেসিডেন্ট সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিতে পারেন।
একই ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প শিকাগোকে উল্লেখ করেন “যুদ্ধক্ষেত্র, নরকের গর্ত ও বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহরগুলোর একটি” হিসেবে।
এর প্রতিক্রিয়ায় গভর্নর প্রিৎজকার বলেন,
“ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের সামরিক বাহিনীকে তার রাজনৈতিক স্বার্থে দাবার গুটির মতো ব্যবহার করছেন। তার ভাষা ও মনোভাবের প্রতি আমরা নিন্দা জানাই।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন,
“প্রিৎজকার ও শিকাগোর মেয়র নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছেন। ইলিনয়েসে অপরাধের হার ভয়াবহ, শিকাগো সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে অপরাধপ্রবণ শহরগুলোর একটি। আফগানিস্তানের লোকজনও হয়তো এখানে এসে অবাক হবে।”
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ